ইরানকে ঋণ দেওয়ার সুর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বোল্টনের পদচ্যুতির একদিনের মধ্যেই ইরান প্রশ্নে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কণ্ঠে ভিন্ন সুর শোনা যাচ্ছে। হোয়াইট হাউসে তিনি সাংবাদিকদের কাছে ইঙ্গিত করেন ইরানের প্রতি ‘সর্বাত্মক চাপ’ প্রয়োগের চলতি নীতি পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে।
জানা গেছে, ইরানের বর্তমান আর্থিক জটিলতা থেকে বেরিয়ে আসার লক্ষ্যে বড় ধরনের ঋণ দিতে আ
গ্রহী ট্রাম্প। ২০১৫ সালে সম্পাদিত পারমাণবিক চুক্তি ভঙ্গ না করার শর্তে ইরানকে ১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ দেওয়ার একটি প্রস্তাব দিয়েছিলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ। প্রস্তাবটি ট্রাম্পের নজরে এসেছে। এ ব্যাপারে তাঁর প্রশাসন ফরাসিদের সঙ্গে কথা-বার্তা শুরু করেছে।
গেল মাসে ফ্রান্সে অনুষ্ঠিত জি-৭ শীর্ষ বৈঠকে ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, ইরানের হয়তো ঋণ বা স্বল্পমেয়াদি ‘লেটার অব ক্রেডিটের’ প্রয়োজন পড়বে। এ জন্য ফরাসি প্রস্তাবটি বিবেচনায় করা হচ্ছে। তবে ইরানকে কোনো অর্থ সহায়তা দেবে না যুক্তরাষ্ট্র। সেসময় ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘আমরা কোনো অর্থ দেব না, আমরা কোনো ক্ষতিপূরণ দিই না। ইরানের তেল আছে, সেই তেল দিয়েই ইরানকে এই অর্থ সংগ্রহ করতে হবে। বিভিন্ন দেশ এই ‘লেটার অব ক্রেডিট’ দিতে ভূমিকা রাখবে।’
জি-৭ বৈঠকে কোনো আগাম ঘোষণা ছাড়াই ইরানি প্রধানমন্ত্রী জাভেদ জারিফ উপস্থিত হয়েছিলেন। অধিকাংশ পর্যবেক্ষকের ধারণা, ট্রাম্পের অনুমোদন ছাড়া জারিফকে বৈঠকে উপস্থিত থাকার আমন্ত্রণ ম্যাখোঁ কিছুতেই পাঠাতেন না।
ইরান প্রশ্নে যে কঠোর নীতি যুক্তরাষ্ট্র অনুসরণ করছে, সেটার রূপকার ছিলেন বোল্টন। তাঁর প্রস্থানের পর অবস্থা বদলেছে। মার্কিন সেক্রেটারি অব স্টেট মাইক পম্পেও এই নীতি পরিবর্তনের পক্ষে। ইসরায়েলকে খুশি রাখতে ট্রাম্প নিজেও ইরানের ওপর সর্বাত্মক চাপ প্রয়োগের নীতি সমর্থন করে যাচ্ছিলেন। তবে এখন সেই অবস্থান পরিবর্তন হতে চলেছে।
এ দিকে অব্যাহত চাপ সত্ত্বেও ইরান নতি স্বীকারের কোনো লক্ষণ দেখাচ্ছে না। উল্টো, ২০১৫ সালের চুক্তি ভঙ্গ করে পারমাণবিক অস্ত্র নির্মাণের পথে কয়েক ধাপ এগিয়ে যাওয়ার ঘোষণা করেছে ইরান।
ট্রাম্প সত্যি সত্যি ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে কতটা আগ্রহী তা স্পষ্ট হবে এ মাসের শেষে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের বার্ষিক অধিবেশনে তাঁর ভাষণে। ইতিপূর্বে কোনো পূর্বশর্ত ছাড়াই ইরানি প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির সঙ্গে সাক্ষাতে আগ্রহী বলে জানিয়েছিলেন ট্রাম্প। রুহানি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ওই অধিবেশনে উপস্থিত থাকবেন। জানা গেছে, জাতিসংঘে তাঁর ভাষণের পর কোনো এক সময় ট্রাম্প ও রুহানির মুখোমুখি হতে পারেন।
ইরানের সঙ্গে একটি চুক্তি করার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করে বুধবার ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন ‘আমার বিশ্বাস ইরান চায় একটি চুক্তি করতে। তাহলে খুবই ভালো ব্যাপার হবে। তারা যদি চুক্তি না করে, সেটিও ভালো ব্যাপার। দেখা যাক কি হয়।’